Hotline: +8801332539801
Hotline: +8809612120202
বাজেটে স্বর্ণ চোরাচালান বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নেই: বাজুস
Back to All News

২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে স্বর্ণ চোরাচালান বন্ধে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। একই সঙ্গে বাজেট চূড়ান্ত করার সময় বাজুসের প্রস্তাবগুলো পুনর্বিবেচনার দাবিসহ এনবিআরকে ১০ টাকা ভ্যাট আদায়ের আড়ালে ৯০ টাকা ঘুষ নেওয়ার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

রবিবার (৯ জুন) বাজুস কার্যালয়ে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এ দাবি করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাজুসের সাধারণ সম্পাদক বাদল চন্দ্র রায়, বাজুসের মুখপাত্র ও সাবেক সভাপতি এবং কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. দিলীপ কুমার রায়, বাজুসের উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেল, বাজুসের সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান, বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ট্যারিফ অ্যান্ড ট্যাক্সেশনের চেয়ারম্যান ও কার্যনির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন, বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ট্যারিফ অ্যান্ড ট্যাক্সেশনের সদস্য সচিব ও কার্যনির্বাহী সদস্য পবন কুমার আগরওয়াল।

 

লিখিত বক্তব্যে বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ট্যারিফ অ্যান্ড ট্যাক্সেশনের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার। এবারের বাজেট বক্তব্যের শিরোনাম ছিল ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার’। প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যাগেজ রুল প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেছেন—‘মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে প্যাসেঞ্জার আসার ক্ষেত্রে কাস্টমস শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার জন্য ২৪ ক্যারেটের গহনার উপর হালকা ডিজাইন করে স্বর্ণের অলংকার বলে নিয়ে আসে। সেক্ষেত্রে ধারা-২, ব্যাগেজ রুল ২০২৩ এর ক্ষেত্রে স্বর্ণের অলংকারের সংজ্ঞা সংযোজন করার প্রস্তাব জ্ঞাপন করছি।’ 

বাজুস অর্থমন্ত্রীর এই বক্তব্যের সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত পোষণ করছে। অর্থমন্ত্রীকে এই উদ্যোগের জন্য ধন্যবাদ জানাই। বাজুস মনে করে, ব্যাগেজ রুল সংশোধন করার মাধ্যমে, স্বর্ণের বার ও রুপার বার আনা বন্ধ করতে হবে। কারণ ব্যাগেজ রুলের সুবিধা নিয়ে অবাধে স্বর্ণের বার বা পিণ্ড বিদেশ থেকে দেশে প্রবেশ করছে। চোরাচালানের মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচার হয়। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। যদিও প্রকৃত অর্থে স্বর্ণ চোরাচালান বন্ধে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি প্রস্তাবিত বাজেটে।

তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট জুয়েলারি শিল্পের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। এনবিআরের পক্ষ থেকে প্রাক-বাজেট আলোচনায় ব্যবসায়ীদের সমস্যা ও দাবি পূরণে দফায় দফায় আশ্বাস দেওয়া হলেও প্রস্তাবিত বাজেটে তার কোনো প্রতিফলন নেই। বার বার বৈধ পথে স্বর্ণের বার, কয়েন ও সোনার অলংকার তৈরি ও রপ্তানিতে উৎসাহ দেওয়া হবে বলা হলেও এই খাত সংশ্লিষ্ট কাঁচামাল ও মেশিনারিজ আমদানির ওপর অসম শুল্কহারের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই সাথে স্থানীয় পর্যায়ে জুয়েলারি অংলকার বিক্রির ওপর রয়েছে ৫ শতাংশ ভ্যাট। ব্যবসায়ীদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে অপরিকল্পিত উৎসে করের বোঝা। এভাবে আমদানি শুল্ক, করহার এবং কাঠামোগত শুল্ক ও শিল্পবান্ধব নীতি প্রণয়নে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উদাসীনতা জুয়েলারি শিল্পকে পিছিয়ে দিয়েছে।

আনোয়ার হোসেন বলেন, গত ৩ এপ্রিল আমরা প্রাক-বাজেট সংবাদ সম্মেলন করেছিলাম। সেখানে আমরা ১৫টি প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলাম, যা আমাদের জুয়েলার্স মালিকদের আশার প্রতিফলন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে, ২০২৪-২০২৫ বাজেটে একটি দাবিও পূরণ হয়নি। ফলে জুয়েলারি শিল্প হমকির মুখে পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে বাজুসের ১৫টি প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার দাবি করছি।

প্রস্তাবগুলো হলো—
১. বর্তমানে জুয়েলারি ব্যবসার ক্ষেত্রে স্বর্ণ, স্বর্ণের অলংকার, রুপা বা রুপার অলংকার বিক্রির ক্ষেত্রে আরোপিত ভ্যাট হার ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা।

২. ইএফডি মেশিন যত দ্রুত সম্ভব নিবন্ধনকৃত সকল জুয়েলারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিতরণ করতে হবে।

৩. অপরিশোধিত স্বর্ণ আকরিকের ক্ষেত্রে আরোপিত সিডি ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে আমদানি শুল্ক শর্তসাপেক্ষে আইআরসি-ধারী এবং ভ্যাট কমপ্ল্যায়েন্ট শিল্পের ক্ষেত্রে পৃথক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে শুধু জুয়েলারি খাতের জন্য রেয়াতি হারে এক শতাংশ নির্ধারণ করা।

৪. আংশিক পরিশোধিত স্বর্ণের ক্ষেত্রে সিডি ১০ শতাংশের পরিবর্তে আইআরসি-ধারী এবং ভ্যাট কমপ্লায়েন্ট শিল্পের জন্য শুল্কহার ৫ শতাংশ করা হোক।

৫. স্বর্ণ পরিশোধনাগার শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে সোনার বর্জ্য ব্যবহারের জন্য প্রস্তাবিত শুল্কহার নির্ধারণ করার প্রস্তাব করছি। স্বর্ণ পরিশোধনাগার শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে স্বর্ণের বর্জ্য ব্যবহারের জন্য শর্তসাপেক্ষে ১ শতাংশ শুল্ক দিয়ে আনার সুযোগ দিলে, এ শিল্পের কাঁচামালের যোগান নিরবচ্ছিন্ন থাকবে। ফলে এ শিল্প ব্যাপকভাবে প্রসারিত হবে।

৬. হীরা কাটিং এবং প্রক্রিয়াজাতকরণের উদ্দেশ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান দ্বারা আমদানিকৃত রাফ ডায়মন্ডের প্রস্তাবিত শুল্কহার নির্ধারণ করার প্রস্তাব করছি।

৭. বহিঃর্বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের জুয়েলারি শিল্পের আধুনিকায়ন প্রয়োজন। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতেও Lab Grown Diamond এর বাজার বিস্তার লাভ করছে। বর্তমানে ভারতে Lab Grown Diamond এর বাজার প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা সমপরিমাণের এবং দিন দিন এই অংক বেড়ে যাচ্ছে। তাই বাজুস Grown Diamond H.S Code (7104.21.10) অন্তর্ভুক্ত করার পাশাপাশি প্রস্তাবিত শুল্কহার নির্ধারণ করার প্রস্তাবনা প্রদান করছে।

৮. বৈধ পথে মসৃণ হীরা আমদানিতে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান দ্বারা আমদানিকৃত মসৃণ হীরা (Polished Diamond) ৪০ শতাংশ Value Addition করার শর্তে প্রস্তাবিত শুল্কহার নির্ধারণ করার প্রস্তাব করছি।

৯. আয়কর আইন ৪৬-(বিবি)(২) ধারার অধীনে Gold Refinery বা স্বর্ণ পরিশোধনাগার শিল্পে ১০ বছরে জন্য কর অবকাশ বা ট্যাক্স হলিডে প্রদানের প্রস্তাব করা হলো।

১০. স্বর্ণের অলংকার প্রস্তুত করার উদ্দেশ্যে আমদানিকৃত কাঁচামাল ও মেশিনারিজের ক্ষেত্রে সকল প্রকার শুল্ককর অব্যাহতি প্রদানসহ ১০ বছরের ট্যাক্স হলিডে প্রদানের প্রস্তাব করা হলো।

১১. আয়কর আইন, ২০২৩ এর ১৪০ (৩) (ক) ধারা অনুযায়ী উৎসে কর কর্তনের দায়িত্ব প্রাপ্ত ‘নির্দিষ্ট ব্যক্তি’র আওতায় দেশের জুয়েলারি শিল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে কর-অব্যাহতি প্রদানের দাবি জানাচ্ছে বাজুস।

১২. স্বর্ণ নীতিমালা ২০১৮ (সংশোধিত-২০২১) এর ৮.২ উপধারার অনুসারে ব্যাগেজ রুল সংশোধনের মাধ্যমে পর্যটক কর্তৃক স্বর্ণের বার আনা বন্ধ করা এবং ট্যাক্স ফ্রি স্বর্ণের অলংকারের ক্ষেত্রে ১০০ গ্রামের পরিবর্তে সর্বোচ্চ ৫০ গ্রাম করার প্রস্তাবনা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে একটি আইটেমের জুয়েলারি পণ্য দুটির বেশি আনা যাবে না এবং পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সাথে ব্যাগেজ রুলের সমন্বয় করার দাবি জানাচ্ছি।

১৩. বৈধভাবে স্বর্ণের বার, স্বর্ণের অলংকার, স্বর্ণের কয়েন রপ্তানিতে উৎসাহিত করতে কমপক্ষে ২০ শতাংশ Value Addition করার শর্তে রপ্তানিকারকদের মোট Value Addition এর ৫০ শতাংশ আর্থিক প্রণোদনা দেওয়ার প্রস্তাব করছি।

১৪. H.S. Code ভিত্তিক অস্বাভাবিক শুল্কহার সমূহ হ্রাস করে পার্শ্ববর্তী দেশসমূহের সাথে শুল্ক হার সমন্বয়সহ এসআরও সুবিধা প্রদান করা।

১৫. মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০২২ ধারা-১২৬ক অর্থ আইন ২০১৯ সালের ১০ নং আইনে ১০২ ধারা বলে, চোরাচালান প্রতিরোধ করতে গিয়ে কাস্টমস কর্তৃপক্ষসহ সকল আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সমূহের উদ্ধারকৃত স্বর্ণের মোট পরিমাণের ২৫ শতাংশ উদ্ধারকারী সংস্থা সমূহের সদস্যদের পুরস্কার হিসেবে প্রদানের প্রস্তাব করছি।


Related News

সায়েম সোবহান আনভীর বাজুস সভাপতি নির্বাচিত

সায়েম সোবহান আনভীর বাজুস সভাপতি নির্বাচিত

Read More
স্বর্ণের জনপ্রিয়তা বাড়বে নতুন বছরে

স্বর্ণের জনপ্রিয়তা বাড়বে নতুন বছরে

Read More
Sayem Sobhan Anvir elected BAJUS president

Sayem Sobhan Anvir elected BAJUS president

Read More
BAJUS central committee President Anvir congratulates as Ctg unit leaders take oath

BAJUS central committee President Anvir congratulates as Ctg unit leaders take oath

Read More
  • ২২ ক্যা: ক্যাডমিয়াম (হলমার্ককৃত) প্রতি গ্রাম স্বর্ণের মূল্য : ১০৮৩০/-
  • ২১ ক্যা: ক্যাডমিয়াম (হলমার্ককৃত) প্রতি গ্রাম স্বর্ণের মূল্য : ১০৩৩৮/-
  • ১৮ ক্যা: ক্যাডমিয়াম (হলমার্ককৃত) প্রতি গ্রাম স্বর্ণের মূল্য : ৮৮৬১/-
  • ২২ ক্যা: ক্যাডমিয়াম (হলমার্ককৃত) প্রতি গ্রাম রূপার মূল্য : ১৮০/-
  • ২১ ক্যা: ক্যাডমিয়াম (হলমার্ককৃত) প্রতি গ্রাম রূপার মূল্য : ১৭২/-
  • ১৮ ক্যা: ক্যাডমিয়াম (হলমার্ককৃত) প্রতি গ্রাম রূপার মূল্য : ১৪৭/-
  • সনাতন পদ্ধতির প্রতি গ্রাম স্বর্ণের মূল্য : ৭৩২৬/-
  • সনাতন পদ্ধতির প্রতি গ্রাম রূপার মূল্য : ১১০/-