Office: +8802-41031722
Hotline: +8801332539801
বাজেট : জুয়েলারি শিল্প বাঁচাতে চাই কর সুবিধা
Back to All News

বাংলাদেশের স্বর্ণ শিল্পের ইতিহাস অত্যন্ত পুরনো। স্মরণাতীতকাল থেকেই বাংলাদেশের কারিগররা উন্নত মানের স্বর্ণালংকার তৈরি করে আসছেন। হাজার বছর আগে যখন আরবীয় বণিকরা ব্যবসায়িক উদ্দেশে এদেশে আসতেন তখন ফিরে যাওয়ার সময় তারা মসলিন কাপড় ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যেতেন। সুদূর প্রাচীনকাল থেকেই বাংলাদেশের স্বর্ণ শিল্পীদের হাতের কাজ বিশ্বব্যাপী প্রশংসা কুড়িয়েছে। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের তথ্য মতে, বিশ্বের হাতে তৈরি স্বর্ণালংকারের ৮০ শতাংশই তৈরি করেন বাঙালি স্বর্ণকাররা। তাদের হাতের কাজ বিস্ময়করভাবে সুন্দর। কিন্তু সঠিক নীতিমালা না থাকায় বাংলাদেশের শিল্পীদের হাতে তৈরি স্বর্ণালংকার এখনো বিশ্ববাজারে তার উপযুক্ত স্থান করে নিতে পারছে না। বাংলাদেশের স্বর্ণ শিল্পীরা যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারে।

বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন মনে করে আগামীতে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে জুয়েলারি শিল্প জাগরণ তুলবে। এখন প্রয়োজন শুধু নীতি সহায়তা এবং এ জুয়েলারি শিল্পকে থ্রাস্ট শিল্প হিসেবে ঘোষণা দিয়ে নার্সিং করা। সরকার ২০২৬ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে জুয়েলারি শিল্প অন্যতম নিয়ামক শক্তি হিসেবে কাজ করতে পারে। স্বর্ণ শিল্প কর্মসংস্থানের এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠতে পারে। বর্তমানে এ শিল্পে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ২০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই এ শিল্পে ৪০-৫০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে। দুবাই যেমন স্বর্ণ ব্যবসার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশও তেমন হতে পারে। বিশ্বে স্বর্ণালংকার হচ্ছে সর্বাধিক ব্যবহৃত ধাতু। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের তথ্য মোতাবেক ২০২২ সালে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের চাহিদা ছিল ৪ হাজার ৭৪০ টন। এর মধ্যে স্বর্ণালংকারের চাহিদা ছিল ২ হাজার ১৮৯ দশমিক ৮ টন। ২০২১ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে স্বর্ণ মজুদ ছিল ৪৫০ দশমিক ১ টন, যা এক বছরের ব্যবধানে ১৫২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১ হাজার ১৩৫ দশমিক ৭ টনে উন্নীত হয়েছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতিকালেও বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের স্বর্ণের ভান্ডার বাড়িয়ে চলেছে।

বাংলাদেশ স্বর্ণালংকার শিল্পে দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। কিন্তু নানা কারণেই এ শিল্পটি সঠিকভাবে বিকশিত হতে পারছে না। আমরা বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় স্বর্ণালংকার শিল্পের সমস্যা নিয়ে কথা বলেছি। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হচ্ছে না। বাংলাদেশের স্বর্ণশিল্পের একটি বড় সমস্যা হচ্ছে উচ্চ হারে করারোপ। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে স্বর্ণালংকারের মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় সব সময়ই ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা বেশি থাকে। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে তো বটেই অভ্যন্তরীণ বাজারেও বাংলাদেশে তৈরি স্বর্ণালংকার মার খাচ্ছে। মূলত এ কারণেই বাংলাদেশে স্বর্ণ চোরাচালান বেশি হয়। কারণ কেউ অবৈধ পথে স্বর্ণ বাংলাদেশে আনতে পারলে তুলনামূলক বেশি মূল্যে তা বিক্রি করা সম্ভব হয়। বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রাথমিক ধারণা হচ্ছে- প্রতিদিন স্থল, নৌ এবং বিমান পথে অন্তত ২০০ কোটি টাকার স্বর্ণ বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। অর্থাৎ বছরে প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকার স্বর্ণ দেশে প্রবেশ করছে। চোরাচালান বন্ধ করা গেলে স্বর্ণালংকার খাত থেকে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পেতে পারত। প্রতি বছর বৈধ পথে ৫৪ টন স্বর্ণ দেশে আসছে। অথচ বাংলাদেশের বার্র্ষিক স্বর্ণের চাহিদা হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টন। অবৈধ পথে আসে এর প্রায় তিন গুণ স্বর্ণ। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে স্বর্ণের বার্ষিক চাহিদা যদি ৩০ থেকে ৪০ টন হয় তাহলে অতিরিক্ত স্বর্ণ যাচ্ছে কোথায়? এ অতিরিক্ত স্বর্ণ নিশ্চিতভাবেই আশপাশের দেশে চলে যাচ্ছে। কারণ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে স্বর্ণের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। ভারত থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণালংকার এবং ডায়মন্ড রপ্তানি করা হয়। ভারত প্রতি বছর স্বর্ণালংকার এবং ডায়মন্ড রপ্তানি করে আয় করে ৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ স্বর্ণ আমদানির জন্য মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে হচ্ছে। অর্থাৎ চোরাই পথে স্বর্ণ দেশে আসা এবং দেশের বাইরে পাচার হয়ে যাওয়া যদি নিয়ন্ত্রণ করা যেত তাহলে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হতো। নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার লোকদের এ বিষয়ে দৃষ্টি রাখতে হবে। প্রয়োজনে উদ্ধারকৃত স্বর্ণের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অংশ তাদের বোনাস বা পুরস্কার হিসেবে দেওয়া যেতে পারে। নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার সদস্যদের মধ্যেও দুর্নীতিবাজ আছেন। তারা নানাভাবে স্বর্ণ চোরাচালানিদের সহায়তা করে থাকেন।

 

আমাদের দেশে বৈধ পথে স্বর্ণ আনা হলে তার মূল্য বেশি পড়ে। আর অবৈধ পথে আনলে মূল্য কম পড়ে। ফলে একশ্রেণির ব্যবসায়ী অবৈধ পথে স্বর্ণ দেশে আনার চেষ্টা করে। বেসরকারি শিল্পোদ্যোক্তা গোষ্ঠীর উদ্যোগে বাংলাদেশে ‘বসুন্ধরা গোল্ড রিফাইনারি লিমিটেড’ নামক সোনা পরিশোধনাগার তৈরি হচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বেসরকারিভাবে এ ধরনের স্বর্ণ পরিশোধনাগার এটিই প্রথম। এ পরিশোধনাগার থেকে উৎপাদিত বা রিফাইন্ড করা ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ লেখা স্বর্ণালংকার ও বার কিছুদিনের মধ্যেই আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি করা হবে। এ প্রতিষ্ঠান থেকে যদি আন্তর্জাতিক মূল্যে অভ্যন্তরীণ বাজারে স্বর্ণ জোগান দেওয়া যায় তাহলে চোরাই পথে স্বর্ণ আসা অনেকটাই বন্ধ হবে।

আমাদের প্রস্তাব হচ্ছে- বাজেটে স্বর্ণালংকার শিল্পের জন্য কার্যকর কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। এ শিল্পকে থ্রাস্ট শিল্প হিসেবে ঘোষণা দিয়ে অন্তত ১০ বছরের জন্য কর অবকাশ সুবিধা দেওয়া হোক। বর্তমানে জুয়েলারি ব্যবসার ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর আরোপের ব্যবস্থা রয়েছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে এটা ৩ শতাংশ।

তাই ভারতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমাদের এখানেও ভ্যাটের হার ৩ শতাংশ নির্ধারণ করা যেতে পারে। স্বর্ণ শিল্পের জন্য নানা ধরনের প্রণোদনা দেওয়া যেতে পারে। স্বর্ণ শিল্পের উদ্যোক্তারা যাতে সহজ শর্তে তুলনামূলক কম সুদে ব্যাংক ঋণ পেতে পারে তার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।


Related News

সায়েম সোবহান আনভীর বাজুস সভাপতি নির্বাচিত

সায়েম সোবহান আনভীর বাজুস সভাপতি নির্বাচিত

Read More
স্বর্ণের জনপ্রিয়তা বাড়বে নতুন বছরে

স্বর্ণের জনপ্রিয়তা বাড়বে নতুন বছরে

Read More
Sayem Sobhan Anvir elected BAJUS president

Sayem Sobhan Anvir elected BAJUS president

Read More
BAJUS central committee President Anvir congratulates as Ctg unit leaders take oath

BAJUS central committee President Anvir congratulates as Ctg unit leaders take oath

Read More
  • ২২ ক্যা: ক্যাডমিয়াম (হলমার্ককৃত) প্রতি গ্রাম স্বর্ণের মূল্য : ১১৭৬৫/-
  • ২১ ক্যা: ক্যাডমিয়াম (হলমার্ককৃত) প্রতি গ্রাম স্বর্ণের মূল্য : ১১২৩১/-
  • ১৮ ক্যা: ক্যাডমিয়াম (হলমার্ককৃত) প্রতি গ্রাম স্বর্ণের মূল্য : ৯৬২৭/-
  • ২২ ক্যা: ক্যাডমিয়াম (হলমার্ককৃত) প্রতি গ্রাম রূপার মূল্য : ২২১/-
  • ২১ ক্যা: ক্যাডমিয়াম (হলমার্ককৃত) প্রতি গ্রাম রূপার মূল্য : ২১০/-
  • ১৮ ক্যা: ক্যাডমিয়াম (হলমার্ককৃত) প্রতি গ্রাম রূপার মূল্য : ১৮১/-
  • সনাতন পদ্ধতির প্রতি গ্রাম স্বর্ণের মূল্য : ৭৮৯৯/-
  • সনাতন পদ্ধতির প্রতি গ্রাম রূপার মূল্য : ১৩৬/-