রাজধানীর কচুক্ষেতের রজনীগন্ধা টাওয়ারের দোকান থেকে স্বর্ণ লুটের ঘটনায় জড়িত আলম এবং মনির ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে নিরাপত্তাকর্মীর চাকরি নিয়েছিলেন। তাদের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরও ভুয়া ঠিকানা এবং অন্যের নামে রেজিস্ট্রেশন করা। যে কারণে এখনও তাদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। অবশ্য ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশও (ডিবি) স্বর্ণ লুটের ঘটনায় অনুসন্ধান শুরু করেছে।
শুক্রবার রাতে কচুক্ষেতের রজনীগন্ধা টাওয়ারের নিচতলায় ‘রাঙাপরী জুয়েলার্সে’র তালা ভেঙে ৩০০ ভরি স্বর্ণ ও হিরা লুট হয়। এর মূল্য দুই কোটি ৫৪ লাখ টাকা। শনিবার সকালে দোকানের মালিক আবুল কালাম ভূইয়া দোকান খুলতে এসে লুটের ঘটনা টের পান।
দোকান ও বাইরের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচানা করে ভাসানটেক থানার পুলিশ নিশ্চিত হয়, লুটের ঘটনায় চারজন জড়িত। এর মধ্যে আলম ও মনির ওই মার্কেটের নিরাপত্তাকর্মী। ঘটনার রাতে তারা নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, দুজনকে বাইরে থেকে ভেতরে ঢোকাচ্ছেন মনির ও আলম। এর পর আলম ও অপর দুজন স্বর্ণের দোকানের তালা ভেঙে ভেতরে ঢোকে। বাইরে তালা মেরে অবস্থান করেন মনির। তিনজন দোকানের ভেতর থেকে স্বর্ণ লুট করার পর মনির তালা খুলে তাদের বের করেন। এরপর চারজনই পালিয়ে যান।
এ ঘটনায় শনিবার ভাসানটেক থানায় মামলা হয়েছে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ‘বেস্ট সিকিউরিটি’ নামে একটি নিরাপত্তাকর্মী সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গত ডিসেম্বরের শেষের দিকে ‘রজনীগন্ধা টাওয়ারে’ নিরাপত্তাকর্মীর চাকরি নেন আলম। এর পর তার মাধ্যমে ১ জানুয়ারি একই প্রতিষ্ঠান হয়ে ওই টাওয়ারে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে যোগ দেন মনির। তারা চাকরির সময় স্থায়ী ঠিকানা ব্যবহার করেছিলেন মাদারীপুর।
ঘটনার পর সেই ঠিকানায় তদন্ত সংশ্লিষ্টরা খোঁজ করে আলম ও মনির নামে কারও অস্তিত্ব পায়নি। এটি তাদের ভুয়া ঠিকানা। তাদের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরও বন্ধ। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানতে পারেন, তাদের ফোন নম্বর থেকে চক্রের তিন সদস্যর বাইরে কারো সঙ্গে কথা হয়নি। নম্বরগুলো ভুয়া নাম ও ভুয়া ঠিকানায় রেজিস্ট্রেশন করা।
গতকাল সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তারা গ্রেপ্তার হয়নি।
পুলিশ বলছে, ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করায় স্পষ্ট যে, স্বর্ণের দোকানে লুট করার উদ্দেশ্যে তারা নিরাপত্তাকর্মীর কাজ নিয়েছিলেন। চাকরির আড়ালে তারা ওই স্বর্ণের দোকান সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেছেন এবং সুযোগ বুঝে লুট করা হয়েছে।
ভাসানটেক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন সমকালকে বলেন, প্রাথমিক তদন্তে স্বর্ণের দোকানে চুরির ঘটনায় চারজন জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে দুজন নিরাপত্তাকর্মী। জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।