বিদেশিরা বাংলাদেশে স্বর্ণশিল্পে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন জানিয়ে বাজুস নেতৃবৃন্দ বলেছেন, বিদেশিরা বিনিয়োগ করলে স্বর্ণশিল্প উপকৃত হবে। তবে বিনিয়োগকারীরা যাতে দেশে শো-রুম খুলতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাদের উৎপাদিত স্বর্ণালঙ্কার দেশে বিক্রি করতে চাইলে ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে করতে হবে। বিদেশি বিনিয়োগের আড়ালে যাতে দেশের স্বর্ণশিল্প ধ্বংস না হয়, বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে প্রধানমন্ত্রী ও বাণিজ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) সিলেট জেলা শাখা আয়োজিত মতবিনিময় সভায় নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, এক সময় স্বর্ণশিল্পের গৌরবময় ঐতিহ্য ছিল। কিন্তু নীতিমালার অভাবে দিন দিন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে যায় এ শিল্প। বাজুস সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীরের হাত ধরে স্বর্ণশিল্প হারানো ঐতিহ্য ফিরে পেতে যাচ্ছে। এজন্য তিনি সারাদেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের একই ছাতার নিচে আনার চেষ্টা করছেন। একটি নীতিমালার অভাবে দেশের স্বর্ণশিল্প হুমকির মুখে পড়েছিল। কলঙ্কের তিলক পরে ব্যবসায়ীদের স্বর্ণ ব্যবসা করতে হচ্ছিল। সায়েম সোবহান আনভীরের দক্ষ নেতৃত্বে নীতিমালা হয়েছে। স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা কলঙ্কমুক্ত হয়েছেন। এক বছর আগেও বাজুসের সদস্য সংখ্যা ছিল মাত্র ৮-১০ হাজার।
সায়েম সোবহান আনভীর প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর সারাদেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের ঐক্যবদ্ধ করার কাজ শুরু করেন। দেশের সকল স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে বাজুসের আওতায় আনতে প্রতিটি জেলায় মতবিনিময় ও সম্মেলন হচ্ছে। গতিশীল কমিটি গঠন করা হচ্ছে। দেশের স্বর্ণশিল্পকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন আনভীর। তিনি বাজুসের মাধ্যমে দেশে স্বর্ণশিল্পে বিপ্লব ঘটাতে চান।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী জুয়েলার্স শিল্পকে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। এজন্য বাজুস দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে স্বর্ণালঙ্কার রফতানি করার পরিকল্পনা নিয়েছে। এতে স্বর্ণশিল্পীরা আবারও তাদের পুরনো পেশায় ব্যস্ত হওয়ার সুযোগ পাবেন। স্বর্ণশিল্পের সুদিন ফিরবে এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হবে। দেশে স্বর্ণশিল্প কারখানা তৈরি হবে।
তারা বলেন, দেশে স্বর্ণ কারখানা স্থাপিত হলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও স্বর্ণ রফতানি সম্ভব হবে। গার্মেন্টেসের পরেই স্বর্ণশিল্প হবে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের মাধ্যম।
বাজুস সিলেট জেলা শাখার সভাপতি মাহবুবুর রহমান সওদাগরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাজুসের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এবং স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ব্যাংকিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের চেয়ারম্যান গুলজার আহমদ।
প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বাজুসের সাবেক সভাপতি এবং স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ডিস্ট্রিক মনিটরিং এর চেয়ারম্যান ডা. দিলীপ কুমার রায়। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাজুসের সহ-সভাপতি এবং ডিস্ট্রিক মনিটরিং কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, বাজুসের উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের বিজনেস এডিটর রুহুল আমিন রাসেল, বাজুসের সহ-সম্পাদক এবং ডিস্ট্রিক মনিটরিং কমিটির সদস্য সচিব জয়নাল আবেদীন খোকন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাজুস সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক বাবুল আহমদ।
পরে সিলেট জেলার নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে নির্বাচন বোর্ড ও আপিল বোর্ডের সদস্যের নাম ঘোষণা করা হয়।