জুয়েলারি শিল্পের উন্নয়নে আট হাজার জনকে প্রশিক্ষণ দেবে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন-বাজুস। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে এবং বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের তত্ত্বাবধানে অ্যাকসিলারেটিং অ্যান্ড স্ট্রেংথেনিং স্কিলস ফর ইকোনমিক ট্রান্সফরমেশন (অ্যাসেট) প্রজেক্টের আওতায় এই প্রশিক্ষণ সারাদেশের জুয়েলার্স ও কারিগরদের দেওয়া হবে।
বুধবার (১০ জুলাই) কক্সবাজারের স্থানীয় একটি হোটেলে প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা বলেন।
বাজুসের উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। তিনি তার বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনার উদ্বৃতি দিয়ে বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত আয়ের দেশে পরিণত করতে হলে কারিগরিভাবে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে হবে।
এজন্য তিনি বর্তমান উদ্যোক্তাদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অভিজ্ঞতার সঙ্গে দক্ষতার উন্নয়ন ঘটবে। যাতে করে উদ্যোক্তারা কারিগরদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে উৎসাহ বোধ করবেন, যার ফলে দেশীয় সোনার অলংকারের সোনালী অতীত পুনরায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়।
ফরিদ উদ্দিন আহমেদ উল্লেখ করেন, দেশের বর্তমানে ৮৪ টি ভোকেশনাল প্রতিষ্ঠানে এখনই সোনা শিল্প সম্পর্কিত বিষয়গুলো সংযুক্ত করা সম্ভব নয়। এজন্যে ধাপে ধাপে দেশের ভোকেশনাল প্রতিষ্ঠানগুলোতে সোনা সম্পর্কিত বিষয়গুলো সংযুক্ত করা হবে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি অ্যাসেট প্রজেক্টের প্রকল্প পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের সরকার এখন সোনা শিল্পকে আলাদাভাবে এগিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন অনুভব করছে। সেজন্য এই ব্যতিক্রমধর্মী প্রশিক্ষণ প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে। এজন্যে বাজুসের বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটি এবং এই প্রশিক্ষণের সঙ্গে সংযুক্ত সব কর্তাব্যক্তিকে ধন্যবাদ।
তিনি আরও বলেন, এই শিল্পে এক সময় অনেক কারিগর ছিলেন। কিন্তু সঠিক পরিচর্যার অভাবে অনেকেই তারা আজ বিলুপ্ত প্রায়। তারা অনেক দক্ষ থাকার পরও তাদের দক্ষতাকে মূল্যায়ন করা হয়নি। আমরা আশা করছি এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ও বাজুসের সহযোগিতায় এই কারিগরদের দক্ষ করে গড়ে তোলার পাশাপাশি তাদের দক্ষতাকে মূল্যায়ন করতে পারবো।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি অ্যাসেট প্রজেক্টের অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক ও উপসচিব মো. আব্দুর রহিম বাজুসকে এই প্রশিক্ষণ আয়োজন করার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, এই কার্যক্রম গ্রহণের মাধ্যমে বাজুস ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর সম্মিলিতভাবে জুয়েলারি শিল্প বিকাশে অবদান রাখতে পারবে। যার ফলে এই প্রজেক্টের আওতায় প্রশিক্ষণার্থীরা আরও দক্ষ হয়ে উঠবে। যাতে করে তারা চাকরিক্ষেত্রে আরও বেশি সুযোগ পাবে বলে আশা রাখছি। পাশাপাশি আমাদের দেশীয় শিল্পকে অগ্রাধিকার প্রদান করার মাধ্যমে বিদেশে সোনার অলংকার রপ্তানি করে দেশীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি বাজুসের মুখপাত্র ও কার্যনির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন বলেন, বাজুস প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীরের দিক নির্দেশনায় এগিয়ে যাচ্ছে জুয়েলারি শিল্প। তিনি সবসময় চান জুয়েলারি শিল্পীরা কারিগরি শিক্ষায় দক্ষ হোক। জুয়েলারি শিল্পকে এগিয়ে নিতে হলে কারিগরি শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। এজন্য প্রাতিষ্ঠানিক কারিগরি শিক্ষা প্রয়োজন। আমাদের কারিগরদের সুনাম বিশ্বজুড়ে। কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ করতে পারলে ভারত, দুবাই, চীনের মত দেশ থেকেও আমরা এগিয়ে যেতে পারবো।