বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) বরিশাল জেলা শাখার সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছেন কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা। শুক্রবার (৩ মে) দুপুর ১২টার দিকে বরিশাল নগরের বগুড়া রোডে নাজেম’স রেস্তোরাঁর সভাকক্ষে বাজুস বরিশাল জেলা কমিটি এ সভার আয়োজন করে।
বাজুস বরিশাল জেলা কমিটির সভাপতি শেখ মোহাম্মদ মুসার সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাজুস কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য ও বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ডিসট্রিক্ট মনিটরিং কমিটির সদস্য সচিব পবিত্র চন্দ্র ঘোষ।
বাজুস বরিশাল জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিনের সঞ্চালনায় সভায় জেলা কমিটির নেতাসহ সদস্য জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় স্থানীয় স্বর্ণকাররা তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন। পাশাপাশি তারা অনলাইনে জুয়েলারি কিনে গ্রাহকদের প্রতারিত হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে এটি প্রতিরোধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে পবিত্র চন্দ্র ঘোষ বলেন, সারা দেশে আমাদের ৪০ হাজার সদস্য হয়েছে। এর অবদান আপনাদের। আমরা সৎভাবে ব্যবসা করবো, স্বর্ণের মান ঠিক রাখবো। ২১ ক্যারেট ২১ থাকবে, ২২ ক্যারেট ২২ থাকবে। এর ব্যতিরেকে আমরা কোনো খারাপ স্বর্ণ বিক্রি করবো না, ভোক্তাদের ঠকাবো না। আর এটাই হলো বাজুস প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীরের নির্দেশ।
তিনি আরও বলেন, বাণিজ্য সংগঠনের একটা নিয়ম আছে, যে যেই ট্রেডের ব্যবসায়ী তাকে সেই ট্রেড সংশ্লিষ্ট সংগঠনের সদস্য হতে হবে। সদস্য ছাড়া কেউ ব্যবসা করতে পারবে না এটাই নিয়ম।
পবিত্র চন্দ্র ঘোষ বলেন, পুরোনো স্বর্ণ কেনার সময় যদি মেমো সংগ্রহ সম্ভব না হয় তাহলে বিক্রেতার জাতীয় পরিচয়পত্র, মোবাইল নম্বর নিয়ে নাম-ঠিকানা দিয়ে খরিদ মেমো পূরণ করবেন। এরপর কোনো সমস্যা হলে সবাই ঐক্যবদ্ধ হন। তবে চুরির মাল জেনে-শুনে যারা কিনবে তাদের সাহায্যে কেউ যাবেন না। কোনো সংগঠন যাবেন না। চোরকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। তবে সৎভাবে, সুন্দরভাবে ব্যবসা করলে সেটা আমরা দেখবো।
মাসুদুর রহমান বলেন, বাজুস প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীর একজন ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট ও আইকন অব বাংলাদেশ। উনি ওনার মতো করে বাজুসকে ব্র্যান্ড করেছেন। গত ৫০ বছরে যা না হয়েছে, তা হয়েছে গত দুই থেকে তিন বছরে। এখন দেশে এমন কেউ নেই যে বাজুসকে চেনে না। এমনকি উপমহাদেশেও বাজুস ও সায়েম সোবহান আনভীরকে সবাই চেনেন। আমাদের দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ এখন শিল্পায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং মেড ইন বাংলাদেশ সিল সংবলিত স্বর্ণবার দেশে উৎপাদিত হবে। আর এ স্বর্ণবার ও অলংকার দেশের বাইরে রপ্তানি হবে। আমরা সায়েম সোবহান আনভীরের কাছে কৃতজ্ঞ যে তিনি এত বড় সুযোগ আমাদের করে দিয়েছেন।
সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আজ বাজুস একটা স্ট্রং প্ল্যাটফর্ম দাঁড়িয়েছে জানিয়ে মাসুদুর রহমান বলেন, নিজেদের স্বার্থে সবাইকে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মেনে ব্যবসা করতে হবে। বাজুস চাচ্ছে আমরা কাউকে ঠকাবো না, নিজেরাও ঠকবো না। এমনকি সরকারকেও ঠকাবো না।
তিনি আরও বলেন, আপনারা যাতে স্বচ্ছতার সঙ্গে ব্যবসা করতে পারেন বাজুস প্রেসিডেন্টের আহ্বানও সেটা। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সংগঠনের বাইরে কারও দায়িত্ব আমরা নেবো না।
সভায় নিয়ম মেনে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সঠিক মুনাফা করার বিষয়েও আলোচনা করা হয়।
সমাপনী বক্তব্যে শেখ মোহাম্মদ মুসা বলেন, সায়েম সোবহান আনভীরের নেতৃত্বে আজ বাজুস একটি শক্তিশালী সংগঠন। তার নির্দেশনায় আজ আমরা বরিশালের সব জুয়েলারি ব্যবসায়ী ঐক্যবদ্ধ। বাজুস যে বিশ্ব কাঠামো মেনে ব্যবসার কথা বলছে, সেটি হলে আমরা আরও সম্মানজনক স্থানে যাবো। সেই সঙ্গে মেড ইন বাংলাদেশ সিল সংবলিত স্বর্ণবার ও অলংকার বিদেশে রপ্তানি হলে এ খাতটিও দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।